
পিপলআইস রিপোর্ট: বগুড়া সদর উপজেলার অসহায় বৃদ্ধ আনসার আলী (৬০) মানবেতর জীবনযাপন করছিলেন। শারীরিক প্রতিবন্ধিতার কারণে চলাফেরায় অসুবিধা হওয়ায় তিনি দীর্ঘদিন ধরে কষ্ট পাচ্ছিলেন। তার স্ত্রী ৭ বছর আগে মারা গেছেন, আর তিন ছেলে মতি, মানিক ও রতন তারা রাজমিস্ত্রী, রিকশাচালক ও দিন মজুরের কাজ করেন। দিন মজুরির সামান্য আয় দিয়ে কোনো রকমে সংসার চালান, ফলে বাবার জন্য হুইলচেয়ার কেনা তাদের পক্ষে সম্ভব ছিল না। এমন দুঃসহ পরিস্থিতিতে মানবিক সংগঠন পেসড এগিয়ে আসে। মানবিকতার শীতল স্পর্শ ছড়িয়ে দিতে প্রোগ্রাম ফর ইকো স্যোসাল ডেভেলপমেন্ট (পেসড)-এর উদ্যোগে চলাফেরায় অক্ষম বৃদ্ধ আনসার আলী (৬০) কে হুইল চেয়ার বিতরণ করা হয়। বৃহস্পতিবার দুপুরে বগুড়া সদরের কর্ণপুর গ্রামের অসহায় বৃদ্ধকে হুইল চেয়ার বিতরণ করা হয়। পেসড এর নির্বাহী পরিচালক রোমমানা খাতুন রুমা বলেন, আমরা সবসময় অসহায় ও দুস্থ মানুষের পাশে দাঁড়াতে চেষ্টা করি। আনসার আলীর কষ্ট দেখে আমরা তার জন্য একটি হুইলচেয়ার দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। আমাদের এই উদ্যোগ যদি তার জীবনযাত্রা কিছুটা সহজ করে, সেটাই আমাদের অর্জন। মেরী সমাজ কল্যাণ সংস্থার নির্বাহী পরিচালক মেহেরুন নেছা মেরী বলেন, সমাজে প্রতিবন্ধীদের বোঝা না ভেবে আত্মর্নিভরশীল হিসেবে গড়ে তুলতে হবে। প্রতিবন্ধী ব্যক্তিরা সমাজের বোঝা নয়, যথাযথভাবে পরিচর্যা করলে তারা সম্পদে পরিণত হবে। প্রতিবন্ধীদের প্রতি নেতিবাচক দুষ্টিভঙ্গি বদলানোসহ তাদের মৌলিক অধিকার আদায়ে সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে। হুইলচেয়ার হাতে পেয়ে আনন্দে আবেগাপপ্লুত হয়ে পড়েন আনসার আলী। কান্নাভেজা কণ্ঠে তিনি বলেন, এতোদিন মনে হতো আমি বোঝা হয়ে গেছি। নিজে চলতে পারতাম না, ছেলেদের ওপর নির্ভর করতে হতো। আজ এই হুইলচেয়ার পেয়ে মনে হচ্ছে আবার নতুন করে বাঁচতে পারব। আমি যেখানে খুশি যেতে পারব, কারও সাহায্যের অপেক্ষা করতে হবে না। এতদিন যে কষ্ট ছিল, আজ যেন সেই কষ্ট দূর হয়ে গেল। পেসডের প্রতি আমি চিরকৃতজ্ঞ। পেসড এর সভাপতির সার্বিক দিকনির্দেশনায় মানবিক ও সেবামূলক কর্মকাণ্ডের ধারা অব্যাহত রাখবে পেসড। এসময় উপস্থিত ছিলেন সংস্থার কার্যনির্বাহী সদস্য আজাহার আলী, প্রোগ্রাম অফিসার রবিউল ইসলাম নিরব সহ প্রমুখ।
Leave a Reply